মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ের পর এবার রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রীর নামে চলমান সাসপেন্সের অবসান ঘটিয়েছে বিজেপি। মঙ্গলবার বিধায়ক দলের বৈঠকে রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন ভজন লাল শর্মা।
রাজস্থান একটি নতুন মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছে এবং মঙ্গলবার আইনসভা দলের বৈঠকে ভজন লাল শর্মার নাম অনুমোদন করা হয়েছে। গত নভেম্বরে পাঁচটি রাজ্যে অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনে (নির্বাচন ২০২৩) তিনটিতে তুমুল বিজয় অর্জনকারী বিজেপি ইতিমধ্যে মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থীর সাসপেন্সের অবসান ঘটিয়েছে।
২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, বিজেপির টিকিটে ভজন লাল শর্মা সাঙ্গানার বিধানসভা আসন থেকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের পুষ্পেন্দ্র ভরদ্বাজকে ৪৮,০৮১ ভোটে পরাজিত করেছেন। ভজন লাল শর্মা মোট ১,৪৫,১৬২ ভোট পেয়েছিলেন।তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ বারেই প্রথম বিধানসভা ভোটে জিতেছেন তিনি!
ছত্তীসগঢ়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ, মধ্যপ্রদেশে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানকে ‘ছেঁটে’ ফেলার পরে এ বার রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের জমানাতেও ইতি টেনে দিল বিজেপি হাইকমান্ড।
জয়পুরের সাঙ্গানের বিধানসভা থেকে এ বারেই প্রথম জিতেছেন ৫৬ বছরের ভজনলাল। দলের অন্দরে ‘সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিতি রয়েছে তাঁর। ভজনলালের পাশাপাশি ছত্তীসগঢ় এবং মধ্যপ্রদেশ মডেলেই রাজস্থানেও দুই উপমুখ্যমন্ত্রী বেছেছে বিজেপি। প্রথম জন জয়পুর রাজপরিবারের সদস্যা তথা বিদ্যাধরনগরের বিধায়ক দীয়া কুমারী। দ্বিতীয় জন ডুডু কেন্দ্রের বিধায়ক তথা দলিত (তফসিলি জাতি) নেতা প্রেমচাঁদ বৈরওয়া।
মঙ্গলবার মরুরাজ্যের নবনির্বাচিত বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে দলের তিন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক— প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী বিনোদ তাওড়ে এবং রাজ্যসভা সাংসদ সরোজ পাণ্ডের উপস্থিতিতে ভজনলালের নাম ঘোষণার পরে বসুন্ধরা অনুগামীরা বিক্ষোভ করতে পারেন বলেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের অনুমান ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘পছন্দ’ নিয়ে কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। দলীয় সূত্রের খবর, বসুন্ধরাই পরিষদীয় দলের নেতা হিসাবে ভজনলালের নাম প্রস্তাব করেন।
এবারে ২০০ আসনের রাজস্থান বিধানসভায় এ বার বিজেপি ১১৫টিতে জিতে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পেয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের ঝুলিতে গিয়েছে ৬৯টি। নির্দল এবং অন্য দলগুলির প্রার্থীরা জিতেছেন ১৫টি আসনে। জল্পনা ছিল, ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী পদে আদিবাসী নেতা বিষ্ণুদেও সাই এবং মধ্যপ্রদেশে অনগ্রসর (ওবিসি) নেতা মোহন যাদবের পরে এ বার জাতপাতের সমীকরণ মাথায় রেখে রাজস্থানে কোনও ‘উচ্চবর্ণের’ নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী বাছতে পারেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেতে পারে দলের দীর্ঘ দিনের ‘ভোটব্যাঙ্ক’ রাজপুতেরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি থেকে উঠে আসা ব্রাহ্মণ মুখেই ভরসা রাখল বিজেপি।