উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষার খাতা দিতে গিয়ে অনেক শিক্ষকেরা এরকমই মনে করেছেন। এছাড়ও আরও নতুন নতুন তথ্য সবার আগে পাবার জন্যে আমাদের Bangla Trends পেজটির সাথে থাকুন।
WBBSE News 2023
বর্তমান নিয়মে লিখিত পরীক্ষায় পাশ করতে গেলে নম্বরের প্রয়োজন আর সেখানে মাল্টিপল চয়েস প্রশ্নের সংখ্যা হচ্ছে ৩০ ছাত্রদের মধ্যে একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে যে তারা এমসিকিউ প্রশ্ন অর্থাৎ মাল্টিপেল চয়েজ প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তারা বড় প্রশ্ন লিখতে চাইছে না কোন রকমে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তারা চলে আসছে। যদিও এটা উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট কিন্তু এই প্রবণতাটা ফাইনালে গিয়ে একটি খারাপ দিক নেবে, কেননা এখন থেকে যদি বড় প্রশ্নের উত্তর না লেখা হয় না লেখার প্র্যাকটিস করা হয় তাহলে কিন্তু ফাইনাল পরীক্ষাতে গিয়ে সেগুলো লিখতে গিয়ে বিস্তর সমস্যার মধ্যে পড়বে ছাত্র-ছাত্রীরা।
পড়ুয়াদের সমস্যা
বড় প্রশ্নের উত্তর লেখার প্রবণতা কম। শুধু মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন (এমসিকিউ) এবং সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন (শর্ট আনসার টাইপ বা এসএকিউ) লিখেই পাশ নম্বর পেয়ে উতরে যেতে চাইছে সাধারণ মানের পরীক্ষার্থীদের বড় অংশ। উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্টের খাতা দেখে এমনটাই মনে করছেন বহু পরীক্ষক। তাঁদের পর্যবেক্ষণ, এমন পরীক্ষার্থীদের অনেকে বড় প্রশ্নের উত্তর পুরো তো লিখতেই পারছে না। যতটা লিখছে, তাতেও ভুল থাকছে বানান ও বাক্য গঠনে। কেউ কেউ আবার বড় প্রশ্নের উত্তর লেখার চেষ্টাও করছে না। সব দেখে শিক্ষকদের প্রশ্ন, তা হলে কি দীর্ঘ গরমের ছুটি-সহ সারা বছর বিভিন্ন কারণে যত ছুটি থাকে, তার ফলে স্কুলে পড়ানোর যে খামতি রয়ে যাচ্ছে, তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে খাতায়?
পড়ুয়াদের সার্ভে
বর্তমান নিয়মে লিখিত পরীক্ষায় পাশ করতে হলে ন্যূনতম ২৪ নম্বর দরকার। শিক্ষকেরা বলছেন, প্রশ্ন এমন থাকে যে, মাল্টিপল চয়েস এবং সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ঠিক মতো লিখতে পারলেই পাশ নম্বর উঠে যায়। বেলগাছিয়া মনোহর অ্যাকাডেমির বাংলার শিক্ষিকা সুমনা সেনগুপ্ত জানান, বাংলা পরীক্ষায় ৩০ নম্বর থাকে এমসিকিউ এবং সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নে। কিছু বিষয়ে আবার এমসিকিউ এবং এসএকিউ থাকে ৪০ নম্বরের। সুমনা জানাচ্ছেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস বা বড় প্রশ্ন যেগুলিতে ৫ নম্বর থাকে, সেগুলি পরীক্ষার্থীরা লেখার চেষ্টাই করছে না। কারণ তারা জানে, এমসিকিউ এবং সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর ঠিক লিখলেই পাশ নম্বর উঠে যাবে।
পরীক্ষকদের পরামর্শ
দক্ষিণ কলকাতার এক শিক্ষিকা জানান, বোর্ডের পরীক্ষার মতো অন্য স্কুলে গিয়ে টেস্ট দিতে হয় না। ফাইনাল পরীক্ষার মতো টেস্টে তেমন কড়াকড়িও থাকে না। এতে আর একটি প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে। তা হল, পরীক্ষার সময়ে অন্যকে জিজ্ঞাসা করে এমসিকিউ এবং সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর লেখা। যা দেখে শিক্ষকদের প্রশ্ন, এই ছাত্রছাত্রীরা বোর্ডের পরীক্ষায় এমসিকিউ এবং সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর লিখে পাশ করতে পারবে তো? ইতিহাসের এক শিক্ষিকা জানাচ্ছেন, সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ২০ শব্দের মধ্যে লিখতে হয়। কিন্তু অনেকে চার থেকে পাঁচটি শব্দের মধ্যে কোনও রকমে উত্তর লিখে দিচ্ছে! তবু সেই উত্তর ঠিক হলে পরীক্ষার্থীদের পুরো নম্বরই দিচ্ছেন শিক্ষকেরা।
খারাপ দিক
করোনা পরবর্তীকাল থেকে এই এমসিকিউ প্রশ্ন লিখার প্রবণতা ছাত্রদের মধ্যে বেশি দেখা গিয়েছে এখন ভাবনার বিষয় যে এই এমসিকিউ মডেল কি ছাত্রদের বড় প্রশ্ন লেখার প্রবণতা খারাপ করে দিচ্ছে এটা কি শিক্ষা ব্যবস্থা খারাপ করছে সেটাও কিন্তু এখানে একটি ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
ছাত্রদের এই বড় প্রশ্নের উত্তর না দেওয়া এবং ছোট প্রশ্নের উত্তর দিয়ে চলে আসুন এই যে প্রবণতা এটা কিন্তু ভবিষ্যতে খারাপ দিক নেবে এরকমই মনে করছেন অনেক শিক্ষকেরা কেননা এখন টেস্টের সময় তারা উৎরে গেলেও সামনে ফাইনাল পরীক্ষা আর তখন কিন্তু অনেক বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে ছাত্ররা।